হামিদের শিক্ষাসেবায় শত শত শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণ

বিনা বেতনের শিক্ষক আজ শত শিক্ষার্থীর ভরসা

বিনা বেতনের শিক্ষক আজ শত শিক্ষার্থীর ভরসা

প্রেরণার গল্পের শুরু

নিজের স্বপ্ন পূরণ না হলেও শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণে নিয়োজিত তিনি। কোনো বেতন বা আর্থিক সুবিধা ছাড়াই প্রতিদিন ছুটে যান বিদ্যালয়ে। গ্রামের মানুষ এখন তাকে ডাকে “আলোর দিশারি” নামে।
এই শিক্ষকের গল্প আজ বাংলাদেশের প্রতিটি সমাজে এক অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে উঠেছে।

অসহায় শিক্ষার্থীদের পাশে তিনি

দারিদ্র্য পেরিয়ে শিক্ষার আলো ছড়ানো

গ্রামের অনেক শিশু দারিদ্র্যের কারণে স্কুলে যেতে পারে না। কেউ বই কেনে, কেউ খাতা জোগাড় করে, কিন্তু পোশাক বা টিফিনের টাকাও নেই।
তবুও, এই শিক্ষক নিজের টাকায় বই, খাতা, কলম কিনে দেন শিক্ষার্থীদের। ফলে, যেসব শিশুরা পড়ালেখা ছেড়ে দিতে পারত, তারা আবার ফিরে এসেছে শিক্ষার টেবিলে।

  • প্রতিদিন সকাল ৮টায় শুরু হয় ক্লাস।

  • তিনটি বিষয় নিজেই পড়ান: বাংলা, ইংরেজি ও গণিত।

  • বিনা বেতনের হলেও কখনও অনুপস্থিত হন না।

তার একটাই লক্ষ্য — “শিক্ষা যেন কখনো টাকার অভাবে থেমে না যায়।”

গ্রামের মানুষ ও অভিভাবকদের দৃষ্টিতে

একজন সত্যিকারের নায়কের স্বীকৃতি

গ্রামের মানুষ বলেন, “এই শিক্ষক না থাকলে হয়তো আমাদের সন্তানরা এখন মাঠে কাজ করত।”
অভিভাবকদের ভালোবাসা ও শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধা তার প্রতিদিনের প্রেরণা।
তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের চোখের আনন্দই আমার পারিশ্রমিক।”

গ্রামবাসীর উদ্যোগে এখন একটি ছোট ঘরে চলছে তার পরিচালিত স্কুলটি। বৃষ্টির সময় ছাদ চুইয়ে পড়ে, তবু শিক্ষক থেমে থাকেন না।

শিক্ষকের সংগ্রামের দিনগুলি

বেতন নেই, তবু হাসি মুখে কাজ

এই শিক্ষক একসময় শহরে চাকরি খুঁজেছিলেন। কিন্তু চাকরি না পেয়ে ফিরে আসেন গ্রামে।
বাবা-মায়ের উৎসাহে গ্রামের শিশুদের পড়ানো শুরু করেন।
প্রথমে মাত্র পাঁচজন শিক্ষার্থী ছিল।
আজ সেই সংখ্যা একশ ছুঁয়েছে।
তাদের মধ্যে কেউ সরকারি স্কুলে ভর্তি হয়েছে, কেউ প্রাথমিক সমাপনীতে কৃতিত্ব অর্জন করেছে।

“আমি বিশ্বাস করি, একজন শিক্ষিত মানুষ শত পরিবারকে আলোকিত করতে পারে।” — শিক্ষক

শিক্ষার্থীদের চোখে প্রিয় শিক্ষক

শিক্ষার্থীরা বলেন, “স্যার আমাদের বই দেন, ক্লাসে গল্প বলেন, আমাদের স্বপ্ন দেখান।”
তারা আরও বলেন, “স্যার না থাকলে আমরা কেউ পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারতাম না।”
এমন আন্তরিক সম্পর্ক আজ শিক্ষক-শিক্ষার্থীর বন্ধনকে করেছে অনন্য।

সরকারি সহায়তা ও উদ্যোগের অভাব

শিক্ষা ব্যবস্থায় বঞ্চিত স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষকরা

যেখানে অনেক শিক্ষক সরকারি চাকরিতে স্থায়ী বেতন পান, সেখানে এই বিনা বেতনের শিক্ষকরা অবহেলিত।
তাদের জন্য কোনো সরকারি ভাতা, প্রশিক্ষণ বা প্রণোদনা নেই।
তবুও তারা দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তুলছেন নিষ্ঠা ও ভালোবাসা দিয়ে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা প্রয়োজন, যাতে এসব নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক অন্তত মৌলিক সহায়তা পান।

শিক্ষা আন্দোলনে অনুপ্রেরণার প্রতীক

গ্রাম থেকে দেশের শিক্ষা বদলে দিতে চান তিনি

এই শিক্ষক শুধু পাঠদান করেন না, গ্রামে শিক্ষার আলো ছড়ানোর আন্দোলনও চালাচ্ছেন।
তিনি সপ্তাহে একদিন অভিভাবক সভা করেন, যেখানে বাবা-মায়েরা সন্তানদের পড়াশোনার অগ্রগতি জানেন।
এভাবে ধীরে ধীরে পুরো গ্রামের মানসিকতা বদলে যাচ্ছে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও প্রত্যাশা

তিনি চান, ভবিষ্যতে তার স্কুলে একটি গ্রন্থাগার ও কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করবেন।
তার মতে, “গ্রামের শিশুরা শহরের সমান সুযোগ পেলে তারা দেশ বদলে দিতে পারবে।”
স্থানীয় প্রশাসন এখন স্কুলটি নিবন্ধনের আওতায় আনার কথা বিবেচনা করছে।

সামাজিক স্বীকৃতি ও মিডিয়ার আগ্রহ

ভালোবাসার গল্প ভাইরাল

সম্প্রতি এক স্থানীয় সাংবাদিক তার গল্প প্রকাশ করেন।
খবরটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়, এবং হাজারো মানুষ শিক্ষককে সম্মান ও সহায়তা পাঠানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
একটি অনুপ্রেরণামূলক গল্প কেবল একজন মানুষ নয়, একটি প্রজন্মের চিন্তাভাবনাও বদলে দিতে পারে — তারই প্রমাণ তিনি।

উপসংহার

এই বিনা বেতনের শিক্ষক প্রমাণ করেছেন, দেশের পরিবর্তন শুরু হয় মানুষের অন্তর থেকে।
বেতন, পদবি বা স্বীকৃতি নয় — ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধই প্রকৃত শিক্ষকের পরিচয়।
যে শিক্ষক নিজের স্বপ্নকে ত্যাগ করে শিক্ষার্থীর স্বপ্নকে বড় করে তোলেন, তিনিই সমাজের সত্যিকারের নায়ক।

অন্য খবর বিডিও দেখতে ভিজিট করুন…………
🌐 ওয়েবসাইট: Shobkhobor24 https://www.shobkhobor24.com

🎥 ইউটিউব: Shobkhobor24 YouTube https://www.youtube.com/@shobkhobor24

📘 ফেসবুক: Shobkhobor24 Facebook https://www.facebook.com/profile.php?id=61578376864291

More From Author

মেঘলা আকাশে স্মৃতিময় ভালোবাসার মুহূর্ত

মেঘলা আকাশে তুমি শুধু মনে পড়ো

শারীরিক সম্পর্কে অনীহার কারণ ও সমাধান

শারীরিক সম্পর্কে অনীহার পেছনের কারণগুলো