শিশুর চোখের রোগ: সময়মতো না বুঝলে ঝুঁকি বাড়তে পারে
শিশুরা চোখে সমস্যা অনুভব করলেও তা অনেক সময় নিজেরা বুঝতে পারে না। অভিভাবকেরাও বাইরে থেকে সবসময় বিষয়টি সহজে শনাক্ত করতে পারেন না। ফলে চিকিৎসা নেয়ার সময় দেরি হয় এবং চোখের সমস্যা আরও বাড়তে পারে।
আন্তর্জাতিক অন্ধত্ব প্রতিরোধ :
- আন্তর্জাতিক অন্ধত্ব প্রতিরোধ সংস্থা (IAPB)–এর তথ্যমতে, বিশ্বজুড়ে প্রায় ৪৫ কোটি শিশু চোখের রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে বেশির ভাগই প্রতিরোধযোগ্য এবং চিকিৎসাযোগ্য। তাই শিশুদের চোখের স্বাস্থ্য নিয়ে সময়মতো সচেতন হওয়া খুবই জরুরি।
শিশুর দৃষ্টিশক্তি রক্ষার জন্য অপরিহার্য:
- শিশুর চোখের সমস্যা শুরুতেই শনাক্ত করা এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করানো দৃষ্টিশক্তি রক্ষার জন্য অপরিহার্য। চোখের সমস্যা যদি অল্প বয়সে ধরা না পড়ে, তবে তা ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির কারণ হতে পারে। শিশুদের চোখের রোগ মূলত কয়েকটি সাধারণ ধরনের হয়ে থাকে।
শিশুদের চোখের সাধারণ সমস্যা
১. রিফ্রেকটিভ এরর
রিফ্রেকটিভ এরর তখন হয় যখন চোখে আলো ঠিকভাবে রেটিনায় ফোকাস হয় না। এর ফলে শিশুদের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়। সবচেয়ে সাধারণ রিফ্রেকটিভ সমস্যা হলো:
-
অ্যাস্টিগমাটিজম: কর্নিয়া বাঁকা বা অনিয়মিত হওয়ায় ঝাপসা দেখা।
-
মায়োপিয়া: দূরের জিনিস পরিষ্কার দেখা যায় না।
-
হাইপারোপিয়া: কাছের জিনিস ঝাপসা দেখা।
এই ধরনের সমস্যা শিশুদের পড়াশোনা এবং দৈনন্দিন কাজকর্মে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই ল্যাপটপ বা মোবাইল ব্যবহারের সময় সীমিত করা এবং নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করানো গুরুত্বপূর্ণ।
২. দূরদৃষ্টি ও নিকটদৃষ্টি
অনেক শিশু জন্ম থেকেই দূরদৃষ্টি বা নিকটদৃষ্টি সমস্যায় ভুগতে পারে। অভিভাবকরা সাধারণত লক্ষ্য করেন শিশু অনেক সময় বই বা টিভির দিকে খুব কাছে গিয়ে তাকায়। এটি সময়মতো শনাক্ত না করলে দৃষ্টিশক্তি আরও খারাপ হতে পারে।
৩. চোখের সংক্রমণ ও প্রদাহ
শিশুর চোখে মাঝে মাঝে লাল ভাব, জল দেখা বা চুলকানি দেখা দিলে তা সংক্রমণের ইঙ্গিত হতে পারে। ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসজনিত সংক্রমণ শিশুর চোখের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৪. আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা
কিছু শিশু আলোতে অতিরিক্ত সংবেদনশীল হয়। তারা সূর্যের আলো বা উজ্জ্বল বাতি এড়িয়ে চলে। এটি অস্বাভাবিক হলেও প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে সহজে চিকিৎসা করা যায়।
শিশুদের চোখের স্বাস্থ্য রক্ষার টিপস
- শিশুদের নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করানো।
- দীর্ঘ সময় স্ক্রিনের সামনে বসা কমানো।
- পুষ্টিকর খাদ্য যেমন ভিটামিন এ, সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ানো।
- খোলা বাতাসে খেলাধুলার জন্য উৎসাহিত করা।
- চোখে লালভাব, জল বা চুলকানি দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া।
শিশুর চোখের রোগ সময়মতো শনাক্ত ও চিকিৎসা করালে অনেকাংশে দৃষ্টি রক্ষা করা সম্ভব। অভিভাবকরা যদি সচেতন থাকেন এবং নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করান, তাহলে ভবিষ্যতে শিশুদের চোখের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
উপসংহার:
শিশুর চোখের রোগ সময়মতো বুঝে না নিলে সমস্যা বাড়তে পারে। তাই অভিভাবকরা সচেতন থাকুন, নিয়মিত পরীক্ষা করান এবং চোখের সমস্যা দেখা মাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। শিশুর দৃষ্টি সুস্থ রাখাই দীর্ঘমেয়াদে তাদের জীবনকে আরও সুন্দর ও স্বচ্ছ করবে।
আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে চান তাহলে ভিজিট করুন: Skills UP IT
অনলাইন আয় সম্পর্কে জানুন: ফেসুবক ইনকাম কিভাবে করতে হয়?